লেখা: হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা শামীম হুসাইন মীর্জা
একটি ক্ষণস্থায়ী জীবনের পরে, মানুষ একটি নতুন পর্বে প্রবেশ করে। মৃত্যুর পর জীবনের মান নিয়ে অনেক ধারণা আছে; কিন্তু বস্তুগত জীবন এবং অনন্ত জীবনের মধ্যে সংযোগ রয়েছে। প্রশ্ন হল: এই সংযোগ কি?
মানুষের অন্যতম প্রশ্ন হল, বস্তুজগতের জীবনের শেষে, পরবর্তী জীবন কী ধরণের হবে? মৃত্যুর পর মানুষের বস্তুগত জীবন কি এবং এই জীবনের সাথে কি আধ্যাত্মিক জগতের সম্পর্ক থাকতে পারে? অথবা বস্তুগত জীবন এবং পরকালের জীবন কী আলাদা ও পৃথক স্থানে গঠিত?
ইমাম আলী (আ.) বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বস্তুজগতকে ক্ষণস্থায়ী জীবন এবং পরকালের জগৎকে অনন্ত জীবন বলে বর্ণনা করেছেন।
এই পৃথিবী থেকে মানুষকে বিষয় নিতে হবে। আর এই বিষয়টি অতি স্পষ্ট। আমাদের পূর্ব যারা ছিলেন, তাদের নীরব কবরস্থানে স্থান হয়েছে। অথবা প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশের মানুষ কোন না কোন কারণে মৃত্যুবরণ করছেন। তাদের স্থানও নীরব কবরস্থানে হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে তাদের (মৃত ব্যক্তিদের) ভুবনকে নীরব বলে মনে হয়, কিন্তু তারা আমাদের সাথে বিভিন্ন উপায়ে কথা বলেন।
তোমারা মৃতদের নিজ চোখে দেখ। তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদেরকে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কবরে শায়িত করা হয়। অথচ সেদিন তারা করবে অবতরণ করতে সক্ষম না এবং তারা সেখানে অবতরণ করতে চাই’ও না। যেন তারা কখনোই এই বস্তুগত পৃথিবীতে ছিল না এবং তাদের চিরস্থায়ী আবাস হল পরকাল। নাহজুল বালাগা, খুতবা নং: ১৮৮।
ইমাম আলী (আ.) সতর্ক করে বলেছেন যে, শীঘ্রই অথবা দেরীতে এই পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে অন্য জগতে যেতে প্রস্তুত হও এবং সুযোগ হাত ছাড়া হওয়ার পূর্বেই এই বিপদজনক যাত্রার জন্য যা প্রয়োজন তা প্রস্তুত কর।
ইমাম আলী (আ.)-এর দৃষ্টিতে বস্তুজগৎ অতি মূল্যহীন, কিন্তু বস্তুগত জগত যখন পরকালে সফলতা অর্জনের পথ হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা অত্যন্ত মূল্যবান এবং যদি কেও এই সুযোগ অর্থাৎ পরকালের জন্য ইহকালকে উত্তম রূপে ব্যবহার না করতে পারে তাহলে তা আফসোসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।